সড়কের দুই পাশ, নদীর পাড় ঘেষে ধূসর-সবুজ রঙের খেত ছড়ানো। চোখ যতদুর যায় সবুজের মাঝে হলুদ ফুলের সমারোহ। নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর গ্রামের জালিয়ার হাওরে খিরা চাষের গ্রাম হয়ে উঠেছে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই বাণিজ্যিকভাবে খিরা চাষ করছেন, জালিয়ার হাওর বেষ্টিত মোজাফরপুর গ্রামের বাসিন্দারা। খিরা চাষ গ্রামবাসীর আত্মকর্মসংস্থানসহ অনেকের বাড়তি আয়ের উপায় হয়ে উঠেছে। এই গ্রামে শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ তাদের জমিতে খিরা চাষ করছেন।
এক বিকেলে মোজাফরপুর গ্রামের জালিয়ার হাওরে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের দুই পাশ এবং নদীর দুই পাশে খিরা খেত। লাগাতার একের পর এক জমিতে খিরা চাষ করা হয়েছে।
মোজাফরপুর বাজারের আড়ৎদার খিরা ব্যবসাহী মো: আব্দুর রউফ ভুঁইয়া জানান, জালিয়ার হাওর বেষ্টিত গ্রামের প্রায় ৮০ শতাংশ কৃষক খিরা চাষ করে থাকেন। খিরা প্রতি ১০ শতাংশ জমিতে অনন্ত ৫০ মণের অধির ফলন হয়। এই জালিয়ার হাওরের খিরা দেশের বিভিন্ন জেলা শহর এবং বিভাগীয় শহরে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি ১৫-১৬ টাকা প্রতি কেজি দরে কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করছেন। সামনে দিকে খিরার বাজর মুল্য কেজি প্রতি আরো বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
মোফাফরপুর গ্রামের কৃষক রাজিব দেবনাথ জানান, তিনি এবছর ১ একর জমি, শাহজাহান ২ একর জমি, সোহেল মিয়া দেড় একর জমি এবং আমিরুল ইসলাম ৩ একর সহ গ্রামের কয়েক শতাধিক কৃষক এই খিরা চাষ করেছে। বর্তমান খিরা প্রতি কেজি ১৫-১৬ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। বাজারে কীটনাশক এবং সারের দাম বেশি থাকায় তেমন লাভবান হচ্ছে না তারা। তারপরেও জমি পতিত না রেখে তাঁরা খিরা, মরিচ এবং মিষ্টি কুমড়া চাষ করছেন। গ্রামের কিছু সংখ্যক কৃষক অল্পসল্প পরিমাণ কৃষি অফিসের সহযোগিতাও তাঁরা পেয়েছেন। সব মিলিয়ে সামান্য লাভবান হবে বলেও ঐ হাওর পাড়ের কৃষক পরিবার গুলো জানান।
এবিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন দিলদার জানান, হাওরে এবছর ২৫ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ করা হয়েছে। খিরা একটি উচ্চফলনশীন সবজি। ফলন ভাল হয়েছে। তবে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তারা যেন রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহারের পরিবর্তে বেশি বেশি জৈব সার ব্যবহার করেন। এতে করে জমির উর্বরতা ঠিক থাকে। তাছাড়া নতুন কোন কৃষক খিরা চাষে আগ্রহ হলে কৃষি অফিস সেই সব চাষিকে প্রশিক্ষন দেওয়া হবে।