ঢাকামঙ্গলবার , ২৫ মার্চ ২০২৫
  • অন্যান্য
  1. অভিযোগ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. কৃষি-সংবাদ
  7. খেলা-ধুলা
  8. জাতীয়
  9. জীবনযাত্রা
  10. দুর্ঘটনা
  11. দুর্নীতি
  12. বিনোদন
  13. বিশেষ প্রতিবেদন
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নীলফামারীতে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে তালাক, শ্যালকের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত মামলা

dhaka24
মার্চ ২৫, ২০২৫ ৫:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

লিটন সরকার, নীলফামারী:

যৌতুকের টাকা না পাওয়ায় স্ত্রীকে তালাক দেওয়া, নির্যাতন চালানো এবং পরিকল্পিত মামলায় শ্যালককে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী স্ত্রী মোছা. সুইটি বেগম এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি গ্রামের মো. ছকমল হোসেনের কন্যা সুইটি বেগম (৩৪) এর সঙ্গে ২০০৯ সালের ৪ জানুয়ারি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন একই উপজেলার খেড়কাটি সবুজ পাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র হারুন অর রশিদ (৪০)। শুরুতে সুখের সংসার থাকলেও, পরবর্তীতে তাদের দাম্পত্য জীবনে অশান্তির কালো ছায়া নেমে আসে।

দুই সন্তানের জন্মের পর সুইটি বেগম জানতে পারেন, তার স্বামী পরকীয়ায় জড়িয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে দাম্পত্য কলহ শুরু হলে, হারুন অর রশিদ সুইটি বেগমের কাছে মোটা অঙ্কের যৌতুক দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা দিতে ব্যর্থ হলে, তাকে ছেড়ে অন্য নারীকে বিয়ের হুমকি দেন তিনি।

এদিকে সুইটি বেগমের বৃদ্ধ বাবা ছকমল হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় মেরুদণ্ড ভেঙে শয্যাশায়ী হলে, মৃত্যুর আশঙ্কায় তিনি জমিজমা সন্তানদের মধ্যে বণ্টন করে দেন। এতে খেড়কাঠি বাজারের একটি দোকান ও কিছু জমির মালিকানা পান সুইটি।

এই খবর পাওয়ার পর, হারুন অর রশিদ তার স্ত্রী সুইটির কাছে জমি ও দোকান নিজের নামে লিখে দেওয়ার দাবি করেন। কিন্তু সুইটি বেগম এতে রাজি না হলে, তার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। দিন দিন স্বামীর অত্যাচার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে, তিনি বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।

সুইটি বেগম জানান, “সংসার টিকিয়ে রাখতে আমি অনেক সহ্য করেছি। কিন্তু আমার স্বামী ও তার পরিবার আমাকে প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। একপর্যায়ে ৩১ আগস্ট ২০২৪ সালে, আমার স্বামী হারুন রান্নার অজুহাতে আমার মুখে খাবারের থালা ছুঁড়ে মারে এবং চুলের মুঠি ধরে এলোপাথাড়ি মারধর করে। পরে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আমাকে রক্ষা করে।”

এই ঘটনার পর, হারুন তাকে সন্তানসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। এরপর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একাধিক সালিশ বৈঠক হলেও, হারুন সংসার করতে রাজি হননি। অবশেষে, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে, হারুন অর রশিদ তালাকনামা পাঠিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সুইটিকে ত্যাগ করেন।

তালাকের পরও বিষয়টি এখানেই শেষ হয়নি। ১৮ নভেম্বর ২০২৪ সালে, বিকেলে সুইটি বেগমের ভাই এনামুল হক তার দোকানের সামনে অবস্থান করছিলেন। এ সময় হারুন অর রশিদ কয়েকজন সহযোগীসহ সেখানে গিয়ে তাকে গালিগালাজ ও হুমকি দিতে থাকেন।

সময় এনামুল প্রতিবাদ করলে হারুন ও তার সহযোগীরা তাকে দোকান থেকে টেনে বের করে মারধর করে। একপর্যায়ে দোকানের লোহার শাটার খসে পড়ে হারুন ও এনামুল দুজনেই সেখানে আহত হয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ সালে, হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে জলঢাকা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় শুধু এনামুল নয়, আরও দুইজন—একরামুল হক ও বিয়ের ঘটক সিরাজুল ইসলাম ওরফে রাজুকেও আসামি করা হয়।

এদিকে, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ সালে, সুইটি বেগম যৌতুক নিরোধ আইনে স্বামীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং: সিআর ৪৩৩/২০২৪ জলঢাকা)।

অভিযোগ রয়েছে, সুইটি বেগমের মামলায় আদালতে জামিন নেওয়ার জন্য হারুন মিথ্যা হলফনামা প্রদান করেন। তালাক দিলেও, আদালতে সুইটিকে এখনো স্ত্রী হিসেবে স্বীকার করেন তিনি, যা প্রতারণার শামিল। সুইটি বেগমের বিজ্ঞ আইনজীবী রাজিব মাহমুদ জানান, “জামিন পেতে আদালতের কাছে মিথ্যে হলফনামা দিয়েছে। মীমাংসার পূর্বেই হারুন তার স্ত্রী সুইটিকে তালাক দিয়েছে। এটি অবশ্যই একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ”

এতেই ক্ষান্ত হননি হারুন। পরে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধিতে আরেকটি মামলা করেন। সুইটি বেগম মনে করেন, এটি তাকে এবং তার পরিবারকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।

সুইটি বেগম বলেন, “আমার স্বামী আমাকে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করেছে। এখন মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই।”

এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারসহ স্থানীয়রা দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন। তারা চান, অপরাধী যেন আইনের আওতায় আসে এবং নির্যাতিত নারী সুবিচার পান।

এদিকে কিছুদিন পূর্বে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার বিলাইচন্ডি ইউনিয়নের (ক্যানেলের বাজার) হরতকি তলা গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের কন্যা পরকীয়া প্রেমিকা মোছা. সাহিদা কে বিয়ে করে ঘরে তুলেছেন হারুন।

মামলার বাদী হারুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সুইটিকে আমি তালাক দিয়েছি। তাঁকে নিয়ে আর সংসার করবো না। আমি নতুন বিয়ে করেছি। সেও আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আদালতের রায়ে যা হওয়ার তাই হবে।

হারুনের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুবোধ রায় জানান, মামলার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। তবে স্ত্রী সুইটি বেগমের দায়ের করা যৌতুক মামলায় হারুন বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।