নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১, মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ: জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ সাংবাদিকদের ১৪ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে পহেলা মে সারাদেশে শোভাযাত্রা বের করে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম। ঢাকায় বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নসহ ১৪ দফা দাবি তোলেন ।
সংগঠনটির ঢাকা জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত শোভাযাত্রায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলার সাবেক সভাপতি মুসা মোরশেদ।
এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের চেয়ারম্যান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর।
বক্তব্য রাখেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম মিরপুরী, মোস্তাক খান, কেন্দ্রীয় সহ সম্পাদক নুরুল হুদা বাবু, সেলিম নিজামী, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, রাইসুল ইসলাম রিপন , ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি জাকির হোসেন, কেন্দ্রীয় নেত্রী মনি আক্তার, মরিয়াম আক্তার মারিয়া, শাহজাদি সুলতানা ও জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
আহমেদ আবু জাফর তার বক্তব্যে বলেন, রাষ্ট্র যন্ত্র সাংবাদিকদের সাথে সবসময় তামাশা করে। রাষ্ট্রের অন্য তিনটি স্তম্ভের লোকেরা ভালো থাকলেও সাংবাদিকরা ভালো নেই। সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়নের কথা বলে বিগত সরকার সাত বছর ঝুলিয়ে রেখে বিদায় নিয়েছে। সরকার গুলো এসে সাংবাদিকদের সামনে মুলা ঝুলানো যেন একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। গণমাধ্যম সপ্তাহ নামে একটি সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চেয়ে ৯ বছর ধরে দাবি তুলে আসছে সাংবাদিকরা। তিনি বলেন, দেশে তো অনেক সংস্কার হয়েছে। সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সাংবাদিক সুরক্ষা ও নিয়োগ নীতিমালা কবে প্রণয়ন হবে তা এখনো আমরা জানি না।
নেতৃবৃন্দ বলেন দেশে শিক্ষা সপ্তাহ, স্বাস্থ্য সপ্তাহ, কৃষি সপ্তাহ, মৎস্য সপ্তাহ, পুলিশ সপ্তাহ, পুষ্টি সপ্তাহ, আনসার সপ্তাহ, বিজিবি সপ্তাহ, চিকিৎসা সপ্তাহ, নৌ সপ্তাহ এবং হাতধোয়া পাও ধোয়াসহ অগণিত সপ্তাহ এবং দিবস রয়েছে। যা বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন করা হলেও সাংবাদিকদের একটি মাত্র দিবস ৩রা মে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন করা হলেও তা বাংলাদেশে হয় না। দেশ গঠনের ৫৪ বছরে সাংবাদিক সমাজকে নিজেদের দাবি এবং অধিকার নিশ্চিত করতে মাঠে আন্দোলন করতে হয়, যা বেমানান এবং দুঃখজনক। দেশের সাংবাদিকরা রুটিরুজি-বেতন-ভাতা নিশ্চিত করতে আন্দোলন করবে নাকি সমাজের দুর্নীতি- বিরুদ্ধে অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়াই করবে? এর মাঝে রাষ্ট্রের মাঝে এক শ্রেণীর দুর্নীতি গ্রস্ত ব্যক্তিরা চায়না সাংবাদিকরা ভালো, থাকুক নিরাপদে থাকুক। তারা চায় না সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন করতে, সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা কিংবা সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ২০১৭ সাল থেকে ৩ মে বিশ্ব গণমাধ্যম দিবসকে সামনে রেখে ১-৭ মে জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ নামে একটি সপ্তাহের প্রবর্তন করে। এবছর ৯ম বারের মত উদযাপিত হচ্ছে।
সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে জেলা ও উপজেলায় ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়ে ১৪ দফায় লিফলেট বিতরণসহ পহেলা মে শোভাযাত্রা, ২ মে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা, ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সাংবাদিকতার নীতি নৈতিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, ৪ মে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের সমস্যা চিহ্নিত করতে মিট দ্যা প্রেস, ৫ মে সরকারি- বেসরকারি পর্যায়ে আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধি, সোর্সদের সাথে পারস্পারিক সমন্বয়, ৬ মে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা এবং ৭ মে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য সাংবাদিক সমাবেশে যোগদান করবে সারাদেশের সাংবাদিকরা।