নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘অশ্লীল, বিভ্রান্তিকর ও নৈতিকতা-বিরোধী’ কনটেন্ট ছড়িয়ে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগে আলোচিত টিকটকার জুটি লায়লা আখতার ফারহাদ ও আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন তরুণ কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও সমাজ সচেতন মোনায়েম হোসাইন মুন্না—যিনি এম এইচ মুন্না নামে পরিচিত।
মূলত টিকটক, ফেসবুক এবং ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লায়লা-মামুনের প্রকাশ করা ভিডিও কনটেন্টগুলো অশ্লীল ও অনৈতিক। সেই সঙ্গে দেশের ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থি।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ শনিবার (১৭ই মে) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট আবদুর রাজ্জাক এর মাধ্যমে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, অভিযুক্তরা ধারাবাহিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন সব ভিডিও প্রকাশ করে চলেছেন, যা সমাজের নৈতিকতা ও তরুণ প্রজন্মের সুস্থ মানসিক বিকাশের পরিপন্থী। তাদের কনটেন্টে বেডরুম ও ওয়াশরুমের মতো ব্যক্তিগত স্থান তুলে ধরা, অশ্লীল ভাষা, গালিগালাজ এবং ‘ধর্ষণ মামলা’, ‘কাবিননামা’ ইত্যাদি বিষয়কে কেন্দ্র করে নাটকীয় ভিডিও নির্মাণ—এসবই জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
এই বিষয়ে এম এইচ মুন্না বলেন, “আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে মনে করি, এধরনের কনটেন্ট কেবল অনৈতিক নয় বরং সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। লাইকের লোভে তারা নিজেদের ব্যক্তিজীবনের নোংরা দিকগুলো সবার সামনে প্রকাশ করছে, যা তরুণ সমাজে বিকৃত মানসিকতা তৈরি করছে। তাই আমি বাধ্য হয়েই আইনের আশ্রয় নিয়েছি।”
লিগ্যাল নোটিশে অভিযুক্তদের আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে এসব কনটেন্ট সরিয়ে ফেলার পাশাপাশি জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তা না হলে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন এম এইচ মুন্না।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে এডভোকেট আবদুর রাজ্জাক বলেন, “এই ধরনের কনটেন্ট সমাজে বিশৃঙ্খলা, নৈতিক অবক্ষয় এবং তরুণদের মাঝে ভ্রান্ত বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এম এইচ মুন্নার এই পদক্ষেপ সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয়।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় কনটেন্ট নির্মাণের নৈতিক সীমারেখা নিয়ে আলোচনা ইতোমধ্যেই চলমান। এম এইচ মুন্নার এই সাহসী উদ্যোগ হয়তো সমাজে সচেতনতা সৃষ্টিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
উল্লেখ্য, এর আগে লায়লা আখতার প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় মামুনকে গ্রেফতার করা হলেও পরবর্তীতে তিনি জামিনে মুক্তি পান। এছাড়া, মামুনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে এবং বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এই লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে তাদের অনলাইন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে, এই বিষয়ে লায়লা ও মামুনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে এবং নেটিজেনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।