মোঃ আব্দুর রব :সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান
সিলেট শহরের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহাসিক স্থাপনা হলো আলী আমজদের ঘড়িঘর।
এটি কেবল একটি ঘড়ি নয়, বরং সিলেট অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সময়ের সাক্ষ্য বহনকারী এক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।
ক্বীন ব্রিজের উত্তরপ্রান্তে, সুরমা নদীর পাড়ে অবস্থিত এই ঘড়িটি বিখ্যাত ‘আলি আমজদের ঘড়ি’ নামে পরিচিত।
এই ঘড়িঘরটি নির্মাণ করেন সিলেটের কুলাউড়ার পৃথিমপাশা জমিদার বাড়ির নবাব মৌলভী আলী আহমদ খান।
১৮৭২ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ১৮৭৪ সালে এটি সম্পন্ন হয়।
ঘড়িটি নবাব আলী আহমদ খানের পুত্র নবাব আলী আমজদ খানের নামে নামকরণ করা হয়।
ঘড়িঘরটি লোহার খুঁটির ওপর ঢেউটিন দিয়ে তৈরি একটি সুউচ্চ গম্বুজ আকৃতির স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন।
এর উচ্চতা প্রায় ২৬ ফুট, এবং ঘড়ির ডায়ামিটার আড়াই ফুট।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীর গোলার আঘাতে এই প্রাচীন ঘড়িঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
স্বাধীনতার পর সিলেট পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ঘড়িটি মেরামতের মাধ্যমে সচল করলেও অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ঘড়ির কাঁটা বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৮৭ সালে পুনরায় মেরামত করে চালু করা হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে ঘড়িটি অচল হয়ে পড়লেও সর্বশেষ ২০১১ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ঘড়িটি পুনরায় মেরামত করে সচল রাখা হয়।
আলী আমজদের ঘড়িঘর শুধু সময় প্রদর্শনের যন্ত্র নয়, এটি সিলেটের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও নান্দনিক স্থাপত্যের এক জীবন্ত নিদর্শন।
এটি সিলেটবাসীর গর্ব এবং পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান।